History

বাংলাদেশে বেসরকারী ভাবে অনুষ্ঠান ও নাটক নির্মাণ প্রক্রিয়ার সূচনা করে বাংলাদেশ টেলিভিশন ১৯৯৪ সালে
সূচনা লগ্নে শুধু নাটক ক্রয় ও সম্প্রচার করা হতো।ঐ প্রক্রিয়ায় ক্রমেই যুক্ত হতে থাকেন নাট্য নির্মাতারা।বেসরকারী ভাবে নির্মিত নাটক ক্রয় ও সম্প্রচারে পরবর্তিতে যুক্ত হয় স্যাটেলাইট টেলিভিশন এটি এন বাংলা,চ্যানেল আই ও তখনকার একমাত্র টেরেস্ট্রিয়াল চ্যানেল একুশে টিভি।সূচনা লগ্নের কয়েক বছরের মধ্যেই টেলিভিশন নাটক ও অনুষ্ঠান নির্মাণ বিক্রয় এবং সম্প্রচার প্রক্রিয়াটি কারিগরি নানা দিকসহ নাটক জমা দেয়া,বিলম্বিত প্রিভিউ ও সম্প্রচার, নাটকের যৌক্তিক মূল্য নির্ধারণ, বিজ্ঞাপন সংগ্রহ করে নাটক সম্প্রচার করা ইত্যাদি ননাবিধ বিষয়ে সংকটের আবর্তে নিমজ্জিত হতে থাকে নাট্য নির্মাতাগন।
উল্লেখ করা প্রয়োজন প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান নির্মাতা ও টেলিভিশন চ্যানেল এর মাঝখানে মধ্যসত্বভোগী অন্য একটি তৃতীয় পক্ষ ততদিনে তৈরী হয়ে যায়। যারা নির্মাতাদের কাছ থেকে কম মূল্যে নাটক ক্রয় করে উচ্চ মূল্যে চ্যানেল গুলোতে বিক্রয় করতো এবং তারাই বিজ্ঞাপন সংগ্রহ করতো ফলে নির্মাতাগণ ক্রমেই তাদের হাতে জিম্মি এবং আর্থিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে থাকে।সেই বাস্তবতায় নাট্যনির্মাতাদের ঐক্য জরুরী হয়ে পড়ে আর তাই নাটক নির্মাণ, বিক্রয়, সম্প্রচার ও যৌক্তিক মূল্য প্রাপ্তিতে সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে সম্মিলিত প্রয়াসে সমস্যাগুলো সমাধানের লক্ষ্যে একটি সংগঠন গড়ে তোলার প্রয়োজন অনুভব করে ২০০১ সালের জানুয়ারী মাসে নাট্য নির্মাতা আবু সাইয়িদ, অনন্ত হিরা, গাজী রাকায়েত, গিয়াসউদ্দিন সেলিম ও মোস্তফা সারোয়ার ফারুকী একটি আড্ডায় মিলিত হয় ২৩/২ ইকবাল রোড মোহাম্মদ পুরে।ঐ ঠিকানা তখন আবু সাইয়িদ ও গাজী রাকায়েত দুজনেরই অফিস ছিল। ঐ আড্ডায় বিস্তারিত আলোচনার পর একটি বিষয়ে সকলেই একমত হয় নির্মাদের সবার আস্থা অর্জন করার মতো একটি সংগঠন গড়ে তোলার জন্য সবার আগে প্রয়োজন সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য সর্বজন শ্রদ্ধেয় একজন নির্মাতার দিক নির্দেশনা সেই ভাবনা থেকেই উল্লেখিত পাঁচজন যায় মুস্তফা মনোয়ার মহোদয়ের ধানমন্ডি দুই নম্বর রোডের বাসায়। সবকিছু জেনে তিনি সংগঠন করার এবং সংগঠনটির প্রধানের দায়িত্ব নিতে সম্মতি দেন এবং নিজ হাতে “ডিরেক্টরস্ গিল্ড” নামের সংগঠনের লোগো ডিজাইন করে দেন।শুরু হয় নির্মাতাদের সংগে যোগাযোগ ও সংগঠিত করার প্রক্রিয়া। উক্ত প্রক্রিয়ায় পরবর্তীতে যুক্ত হন মামুনূর রশীদ ও সাইদুল আনাম টুটুল ।উল্লেখিত সাতজনের বেশ কয়েকটি সভা হয় ধানমন্ডিতে মুস্তফা মনোয়ার মহোদয়ের বাসায় এবং মগবাজার কাজী অফিস সংলগ্ন সাইদুল আনাম টুটুল এর অফিসে। ঐ সভাগুলোর মধ্য দিয়ে মূলত সবার সংগে যোগাযোগ করে ২০০২ সালের ১৩ জুলাই বিকাল চারটায় ১০৩ কাকরাইলে তখনকার “টেলিহোম” কার্যালয়ে একত্রিত হয় নির্মাতারা। ১৯ জন নির্মাতার উপস্থিতিতে যে সভাটি হয় সেখানে সভাপতিত্ব করেন সাইদুল আনাম টুটুল ঐ সভায় নাট্য নির্মাতাদের একটি
দায়িত্বশীল ফোরাম “ডিরেক্টরস্ গিল্ড” এর সর্বজন শ্রদ্ধেয় মুস্তফা মনোয়ারকে মহোদয়কে আহ্বায়ক ও যৌথ ভাবে অনন্ত হিরা ও গাজী রাকায়েতকে সদস্য সচিব করে ১১ সদস্য বিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়।অন্য সদস্যরা ছিলেন মামুনূর রশীদ, সাইদুল আনাম টুটুল, বেলাল আহাম্মেদ, আবু সাইয়িদ, গিয়াসউদ্দিন সেলিম, মোস্তফা সারোয়ার ফারুকী, সোহেল আরমান ও মোহাম্মদ হোসেন জেমী।সিদ্ধান্ত নেয়া হয় খসড়া গঠনতন্ত্রের চুড়ান্ত অনুমোদন ও পূর্নাঙ্গ কার্যকরী পরিষদ গঠনের জন্য তিন সপ্তাহের মধ্যে একটি সাধারণ সভা আহবান করা হবে।
আরো সিদ্ধান্ত নেয়া হয়, যে কোনো চ্যানেলে তিনটি নাটক প্রচার হয়েছে এমন নির্মাতাগণ “ডিরেক্টরস্ গিল্ড” এর পূর্নাঙ্গ সদস্য হতে আবেদন করতে পারবেন এবং একটি নাটক প্রচার হয়েছে এমন নির্মাতাগন সহযোগী সদস্য হবার জন্য আবেদন করতে পারবেন।
পরবর্তীতে ২০০২ সালেই নীলখেত পরিকল্পনা উন্নয়ন একাডেমি মিলনায়তনে একটি সাধারণ সভায় আহ্বায়ক কমিটির দেয়া প্রস্তাবিত খসড়া গঠনতন্ত্রটির কিছু সংশোধনীসহ অনুমোদন দেয়া হয় একই দিনে মুস্তফা মনোয়ারকে সভাপতি ও সাইদুল আনাম টুটুলকে সাধারণ সম্পাদক মনোনীত করে ১৭ সদস্য বিশিষ্ট পূর্নাঙ্গ কার্যকরী পরিষদের অনুমোদন দেয়া হয়।